অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দরে পরিণত হতে যাচ্ছে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিশ্বের বড় বড় আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দরের সব সুবিধা রাখা হবে সেখানে। এজন্য প্রায় ২১শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দরটি আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চীনের বেইজিং আরবান কনস্ট্রাকশন গ্রুপ (বিইউসিজি) এই আধুনিকায়নের কাজ করছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে যুক্ত হবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। এছাড়া বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা যায়, নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণসহ সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন কাজে মোট ব্যয় গবে ২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে। গত এপ্রিলে এই কাজের জন্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সাে চুক্তি করে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
বেবিচক জানায়, প্রকল্পের কাজ শেষ হতে ২ বছর ৯ মাস সময় লাগবে। প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হলে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি অত্যাধুনিক টার্মিনাল ভবন, একটি কার্গো ভবন, আধুনিক এটিসি টাওয়ার, ট্যাক্সিওয়ে ও অ্যাপ্রোন এবং আধুনিক ফায়ার স্টেশন স্থাপন সম্ভব হবে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় নতুন বোর্ডিং ব্রিজ, ব্যাগেজ হ্যান্ডেলিং সিস্টেম, ফ্লাইট ইনফরমেশন ডিসপ্লে সিস্টেম, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পৃথক সাবস্টেশন, অত্যাধুনিক ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম, সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম, বিশ্বমানের ইডিএস সিস্টেম, লিফট এক্সেলেটর, অত্যাধুনিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা সার্ভিলেন্স সিস্টেম, জেট-১ জ্বালানি সরবরাহের জন্য অত্যাধুনিক ফুয়েল হাইড্রেন্ট সিস্টেম, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ও কার্যকর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, ভয়েস কন্ট্রোল কমিউনিকেশন্স সিস্টেম ও ভয়েস রেকর্ডিং রাডার সিস্টেম স্থাপন ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। এর ফলে বিমানবন্দরের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৬ লাখ হতে ২০ লাখে উন্নীত হবে।
বেবিচেক কর্মকর্তারা জানান, দেশের প্রথম বিমানবন্দর হিসেবে ওসমানীতে থাকবে বিস্ফোরকদ্রব্য শনাক্তকরণ ব্যবস্থা। কেউ বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করলেই ধরা পড়ে যাবে। আবার বিভিন্ন পণ্যের ভেতরে কোনো ব্যক্তি বিস্ফোরকদ্রব্য কিংবা বোমা নিয়ে গেলেও তা জানতে পারবে কর্তৃপক্ষ। এ ধরনের ব্যবস্থা প্রথমবারের মতো সিলেট বিমানবন্দরে স্থাপিত হবে। এর মাধ্যমে দেশের প্রথম বিমানবন্দর হিসেবে ফাইভ লেভেল সিকিউরিটি সিস্টেমের আওতায় আসবে বিমানবন্দরটি। এ ছাড়াও অগ্নিনিরাপত্তাতেও বিশ্বমানের অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রাখা হবে।
বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি বর্তমান সরকারের একটি দূরদর্শী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
Leave a Reply