সিলেটের অবস্থিত সিলকো ফার্মাসিটিকাল নামে একটি ঔষধ কোম্পানীতে ভেজাল ও নকল ঔষধ তৈরীতে জড়িত বলে খবর পাওয়া গেছে।গত ২৫ জুন,২০২৪ তারিখে, সালমান হোসেন নামে কোম্পানির কোয়ালিটি কোন্ট্রোল বিভাগের একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।তিনি জানান যে,কোম্পানিটি মেয়াদউত্তৃর্ণ কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করে দেশের অনান্য বড় বড় ব্রান্ডের নামে প্যাকেজিং করে বাজারে সরবরাহ করে।তিনি আরও জানান যে,তদন্ত করলে হয়তো দেখা যাবে বড় বড় কোম্পানিরাও এতে জড়িত আছে।নকল বা ভেজাল ওষুধে বাজার সয়লাব হয়ে যাওয়ার বিষয়টি বহুল আলোচিত। ওষুধসেবনে যদি জীবন রক্ষার পরিবর্তে মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হয়, তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? ঔষধ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নকল বা ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তারপরও এসব কাজে জড়িত অপরাধীদের নির্মূল করা যাচ্ছে না কেন? নকল বা ভেজাল ওষুধ কীভাবে বিপণন করা হয়, বিষয়টি বহুল আলোচিত। এরপরও এসব কাজে জড়িত অপরাধীদের নির্মূল করতে না পারার বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। জানা যায়, গ্রেফতারের পর ছাড়া পেয়ে আবারও পুরোনো পেশায় ফিরছেন চক্রের সদস্যরা। এ ধরনের চক্রের ৭২ সদস্যকে চিহ্নিত করেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বিভিন্ন ইউনিট। এ ধরনের অপরাধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা উচিত। অভিযোগ রয়েছে, সরষের ভেতরেই রয়েছে ভূত। এ কারণেই নকল বা ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হলেও কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না। কাজেই সরষের ভূত তাড়াতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। এ খাতের দুর্নীতিবাজদের অন্য প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে তুলনা করা কোনোভাবেই ঠিক হবে না। ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতেও জালিয়াতির আশ্রয় নিচ্ছে অসাধু চক্র। অভিযোগ রয়েছে, ওষুধের কাঁচামাল আমদানির নামে অনেকে অর্থ পাচারে জড়িয়ে পড়েছেন। ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন, নতুন লাইসেন্স প্রদান, প্রকল্প হস্তান্তর বা স্থানান্তর, ওষুধ নিবন্ধন, নমুনা পরীক্ষা, মান নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতির বিষয়টি আলোচনায় আসে। এসব বিষয়ও খতিয়ে দেখা দরকার। কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি চিহ্নিত হলে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
আটা-ময়দা-কেমিক্যাল প্রভৃতি মিশিয়ে তৈরি করা নকল ওষুধ রোগ সারানোর বদলে ভোক্তার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের নকল ওষুধ ক্রয় করে মানুষ কীভাবে প্রতারিত হচ্ছে, তা বারবার গণমাধ্যমে এসেছে। দুঃখজনক হলো, বেশি লাভের আশায় জেনেশুনেই কিছু ব্যবসায়ী নকল ওষুধ বিপণনে সহায়তা করে থাকেন। নকল ওষুধ বিপণনে যারা সহায়তা করে থাকেন, বিন্দুমাত্র মানবিক গুণাবলিও নেই তাদের মধ্যে। এসব অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার। নকল ওষুধের বিস্তার কতটা ঘটেছে, তাও খুঁজে বের করা দরকার। বস্তুত নকল বা ভেজাল ওষুধ তৈরি এবং বিপণনের সঙ্গে জড়িতরা বড় ধরনের অপরাধ করছেন। কাজেই এসব অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করার জন্যও নিতে হবে যথাযথ পদক্ষেপ।
(ভিডিও আসছে…)
Leave a Reply