সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সিলেট মহানগরীর সামাজিক নিরাপত্তা আরোমজবুত ও টেকসইকরণে ‘আমাদের করণীয়’ শীর্ষক পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এই সভায় সিলেটে ধর্ষণসহ অপরাধ দমনে উপস্থিত সুধীজনের পরামর্শমতে ৪টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেগুলো হচ্ছে- নগরভবনে অভিযোগ কেন্দ্র স্থাপন, প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে নাগরিক কমিটি গঠন, নিয়মিত পরামর্শ সভা করা ও একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা।
শনিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে নগরভবনের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সভায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, সাম্প্রতিক সময়ে এমসি কলেজ সহ সিলেটের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজন ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতিতে সিলেট মহানগরীর সামজিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেট একটি আধ্যাত্মিক ও পর্যটন নগরী। এই নগরীর ধর্মীয় সম্প্রীতি আর ভিন্নমতে সহনশীলতায় রয়েছে রাজনৈতিক সম্প্রীতির দীর্ঘ ইতিহাস। তাই আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য সিলেটকে একটি শান্তি ও সম্প্রীতির নগর হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য নগরবাসির সার্বিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
সিসিক মেয়র বলেন, সিলেটের সকল সামাজিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবি সংগঠন, ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন, আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের মতামতের ভিত্তিতে সিলেট সিটি করপোরেশন মহানগরীর সামাজিক নিরাপত্তা টেকসইকরণে একটি ‘বিশেষ টাক্সফোর্স’ গঠন করবে।
নগর ভবনে খোলা হবে একটি ‘অভিযোগ কেন্দ্র’। যেখানে কেউ নির্যাতনের শিকার হলে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগ করতে পারবে এবং সিসিক তাদের আইনি সহায়তা প্রদান করবে।
নগরীর ২৭ টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলদের সমন্বয়ে গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা বলয় আরো মজবুত করতে গঠন করা হবে একটি ‘নাগরিক কমিটি’। সিসিকের উদ্দ্যোগে প্রতি মাসে সকলকে নিয়ে এ ধরণের পরামর্শ সভা আয়োজন করা হবে বলেও জানান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
সিলেট মহানগরীতে অপরাধ প্রবনতা বেড়েছে উল্লেখ্য করে পরামর্শ সভায় বক্তরা নগর জুড়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার উপর গুরুত্ব দেন। বক্তরা বলেন, বিশেষ করে নারীদের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। অপরাধিরা যাতে কোন দল বা রাজনৈতিক পরিচয়ে ছাড় না পায় তার জন্য নগরবাসিকে সোচ্ছার হতে হবে। অভিবাবকদেরও আরো সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন বক্তরা।
সামাজিক নিরাপত্তা ইস্যুতে নাগরিকদের দাড়াতে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহবান জানান বক্তারা। একই ধরনের ঘটনায় দ্রুত এবং দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় সামপ্রতিক সময়ে ধর্ষণ কিংবা গণধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।
সভায় বক্তারা বলেন, অপরাধিদের রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া বন্ধ করতে না পারলে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি আরো হবে। তাই সবাইকে দল মতের উর্ধ্বে উঠে অপরাধের বিরোদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
এতে বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান এডভোকেট, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক, গনতন্ত্রী পার্টি সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সিলেট জেলা প্রাক্তন সভাপতি বেদানন্দ ভট্টাচার্য্য এডভোকেট, ওয়ার্কার্স পার্টি সিলেট জেলা সভাপতি সিকান্দর আলী, সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ময়নুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মো. উসমান আলী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, মদন মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সর্ব্বানী অর্জ্জুন, সিলেট জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এটিএম ফয়েজ, সিলেট প্রেস ক্লাবে সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের সভাপতি ডা. মো.শামিমুর রহমান, সিলেট জেলা আইনজীবি সমিতির প্রাক্তন সভাপতি এমাদউল্লাহ শহিদুল ইসলাম শানি এডভোকেট, মোহাম্মদ লালা এডভোকেট, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আল নবেল, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশ-ইমজা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক সজল ছত্রী, ফটো জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মামুন হোসেন, সিলেট প্রেসক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি ইকরামুল কবীর, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ চৌধুরী শিশু, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করীম কীম, পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, ইমাম সমিতির সভাপতি মুফতি ফয়জুল হক ও সিলেট মহানগর ইমাম সমিতির সভাপতি মাও. হাবিব আহমদ শিহাব।
সভায় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর আজম খান, কাউন্সিলর এবিএম উজ্জল, কাউন্সিলর আব্দুল মুহিত জাবেদ, কাউন্সিলর এসএম শওকত আমীন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, সিলেট বৌদ্ধ সমিতির সাধারণ সম্পাদক উৎপল বড়ুয়া, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি মো. গাজী রহমত উল্লাহ, খোলাফত মজলিশের সিলেট মহনগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এমরান আলিম, নেজামে ইসলামী পার্টির মহানগর সভাপতি হা. মাও. নওফল আহমদ, জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম সিলেট মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাও. আবু বকর সিদ্দিকী সরকার, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ রেনু, সাধারণ সম্পাদক শংকর দাস, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি িদিগেন সিংহ, সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের সহযোগি অধ্যাপক মো. কবীর আহমদ, মদন মোহন কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি সৈয়দ কাওছার আহমদ, সিটি সুপার মার্কেটের সভাপতি ময়নুল হোসেন, সিলেট প্রেসক্লাবের সিনিয়র সিহ সভাপতি এম এ হান্নান, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা সিলেট মহানগর শাখার যুগ্ম সম্পাদক আহমদ হোসেন খান, এপেক্স ক্লাব অব বাংলাদেশের প্রতিনিধি মো. শাহেদুর রহমান শাহেদ, সমাজকর্মী সেলিনা চৌধুরী, রাবেয়া আক্তার রিয়া, জাতীয় পার্টি নেতা মো. রাবেল হোসেন, জাতীয় পার্টি নেতা আতিকুর রহমান, সাংবাদিক বদরুদ্দোজা বদর, সাংবাদিক সুমন কুমার দাশ, সাংবাদিক আব্দুল বাতিন ফয়ছল, সাংবাদিক মো. আহমদ আলী, সাংবাদিক মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন, সাংবাদিক আনিস রহমান, সাংবাদিক নাজমুল কবীর পাভেল, সাংবাদিক সৈয়দ রাসেল, সাংবাদিক এইচএম শহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক হোসাইন আহমদ সুজাদ, সাংবাদিক তুহিনুল হক তুহিন, সাংবাদিক এসএম সুজন, সাংবাদিক টুনু তালুকদার, সাংবাদিক মো. দুলাল হোসেন, সাংবাদিক নিজামুল হক লিটন, সাংবাদিক মোস্তাফিজ রোমান, সাংবাদিক শফি আহমদ ও সাংবাদিক বিপলু আহমদ প্রমুখ।
Leave a Reply