ফাতেমা ইসরাত লুভনা (২৪) সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজের ৫ম বর্ষের ছাত্রী।মানব সেবার মহান ব্রত নিয়ে চিকিৎসা পেশায় এগিয়ে এসেছিলেন।
স্বপ্ন ছিলো ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করবেন,নামের সাথে ডাক্তার সবটা যুক্ত হওয়ার আগেই স্বপ্নের মাঝে নেমে আসে বিষাদের ছাপ,নিজে চিকিৎসক হয়ে মানুষকে সুস্থ করার সুযোগটা এখনো অধরা থাকলেও বিপরীতে নিজেই কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের শয্যায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন।
শিক্ষানবিশ থাকাকালীনই পরিবারের ইচ্ছায় বিবাহিত জীবনে আবদ্ধ হন ফাতেমা ইসরাত লুভনা। লুভনা’র স্বামী পেশায় একজন ছোট চাকরিজীবি।
দুই সন্তানের জননী লুভনা’র বড়ো মেয়ের বয়স সাড়ে ৩ বছর এবং ছোট ছেলের বয়স ৭ মাস।
২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ছোটো ছেলে জন্মগ্রহণের পরদিন থেকেই ক্রমাগত ভাবে লুভনার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।
তাৎক্ষণিক ভাবে পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করালে চিকিৎসকরা তাকে প্রথমে CCU তে রেখে পর্যবেক্ষণ করেন এবং পরবর্তীতে লুভনাকে ICUতে স্থানান্তর করা হয়। ICU তে নেয়ার পর দেখা যায় –
১.Septicemia, Septic shock
২.DIC
৩.Posterior reversible encephalopathy syndrome
৪.Cardiomyopathy
৫.Pregnancy induced hpyertension
৬.AKI(acute kidney injury)
৭.HELLP syndrome
লুভনার উপরোউক্ত অসুখের চিকিৎসার জন্য Plasma therapy,কিডনির অসুখের জন্য ক্রমাগত ডায়লাইসিস এবং ব্লাড ইনফেকশনের জন্য নানাবিধ এন্টিবায়োকিট কাজ না করাতে বিদেশ থেকেও এন্টিবায়োটিক আনা হয়।
দীর্ঘ দেড়মাস টানা হাসপাতালে চিকিৎসার পর তার শারীরিক অবস্থার উন্নতিতে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।তবে তাঁর CKD(chronic kidney disease) জন্য নিয়মিতভাবে সপ্তাহে দুইবার তাকে ডায়লাইসিস দিতে হয়।চিকিৎসকদের মতে শীঘ্রই কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা না গেলে লুভনাকে বাঁচানো সম্ভব না।
গত দুইসপ্তাহ আগে লুভনার শারীরিক অবস্থার অবনতিতে তাকে আবারও ICUতে নেওয়া হয়।বর্তমানে তাঁর Hepatitis C ধরা পরে এবং কিডনির Creatinine level বেড়ে 11mg/dl হয়ে গিয়েছে।
তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী,Hepatitis C এর চিকিৎসার পর যত দ্রুত সম্ভব কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা দরকার।
এই যাবতকাল পর্যন্ত লুভনার এই ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০-১৫লাখ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে।আর সামনে তাঁর কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট এর জন্য প্রায় ৪০লাখ টাকার প্রয়োজন।
দীর্ঘ ৭ মাসের ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য তাঁর মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট এর এই বিশাল অংকের টাকা জোগাড় করা প্রায় অসম্ভব।
এমতাবস্থায় একজন মৃত্যু পদযাত্রী মাকে তাঁর অবুঝ সন্তানদের কাছে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয় আনতে সমাজের বিত্তবান মানুষসহ সকলের সাহায্যের হাত প্রসারিত প্রয়োজন। সকলের সহযোগিতা পেলে হয়তো আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় লুভনা আবার সুস্থ হয়ে উঠবে।
দুই অবুঝ শিশুর জননী ফাতেমা ইসরাত লুভনা’র চিকিৎসার জন্য তাঁর সহপাঠী-বান্ধবীরা সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লুভনা’র বান্ধবীরা সকলের কাছে আকুল আবেদন করে বলেন আমাদের বান্ধবী এবং ছোট দুইটি শিশুর মাকে বাচাঁনোর জন্য আপনাদের দোয়া এবং আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করছি।
আপনার আমার সকলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় লুভনা আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারে,দুটি নিস্পাপ শিশু ফিরে পেতে পারে মায়ের আদর-সোহাগ ভালোবাসা।
Leave a Reply