দ্বিতীয় ধাপে সিলেটের সাতটি পৌরসভার নির্বাচন শনিবার (১৭ জানুয়ারি) সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে চারটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন, দুটিতে বিএনপি আর একটিতে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী জয় লাভ করেছেন। এর বাইরে গত ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনেও বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
নির্বাচনী ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, যেসব এলাকায় আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী ছিলেন তারা সকলেই বিজয়ী হয়েছেন। আর যেসব পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন তারা ফেল করেছেন। শুধু ফেলই নয় মাধবপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শ্রীধাম দাশ গুপ্তের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এর বাইরে অন্য তিন পৌর এলাকায় বিদ্রোহীরা সমান তালে লড়াই করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে বিদ্রোহী প্রার্থীরা নৌকার চাইতে বেশি ভোট পেয়েছেন।
এদিকে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এখানেও রয়েছেন আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। আর এসব বিদ্রোহী প্রার্থীরা এখনো প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থীরা।
তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে গোলাপগঞ্জে নৌকার প্রতীক পেয়েছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহেল আহমদ। আওয়ামী লীগ মনোনীত এ মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে লড়ছেন দলের পৌর কমিটির সভাপতি বর্তমান মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল ও পৌর কমিটির সাবেক প্রচার সম্পাদক, সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু।
জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী খলিল উদ্দিন। তার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ফারুক আহমদ ও উপজেলা যুবলীগের সদ্য পদত্যাগ করা আহ্বায়ক আবদুল আহাদ। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে যুবলীগের আহ্বায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন আহাদ।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, যারাই দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে করেছেন তাদেরকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। এর বাইরে কেন্দ্র থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা তাদেরকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছেন।
তবে নির্বাচনে দাঁড়ানো একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী বলছেন, জনগণের চাপেই তারা নির্বাচন করছেন। আর স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের চাইতে ব্যক্তির ইমেজ কাজে লাগে। সেজন্য জনগণ আর পুরনো দিনের কাজের কথা চিন্তা করেই তারা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য আজিজুস সামাদ আজাদ ডন বলছেন, আমরা সাংগঠনিক টিম বসে নির্বাচন নিয়ে আলাপ-আলোচনা করবো। কেন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীরা হচ্ছেন সেটি আমরা খতিয়ে দেখবো। তবে আগের থেকে অনেক বিদ্রোহ কমেছে। আমরা আশাকরি আগামীতে আরও কমবে।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সুনামগঞ্জ সদর পৌরসভায় নাদের বখত, ছাতকে আবুল কালাম চৌধুরী, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মো. জুয়েল আহমদ, কুলাউড়ায় অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ বিজয়ী হয়েছেন।
আর হবিগঞ্জের মাধবপুরে বিএনপির হাবিবুর রহমান মানিক, নবীগঞ্জ পৌরসভায়, ছাবির আহমদ চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন।
অন্যদিকে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আক্তারুজ্জামান আক্তার চামচ প্রতীকে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন।
এর আগে ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ফরিদ আহমেদ অলি ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন।
Leave a Reply