ঢাকার ধামরাইয়ে লাইসেন্স বিহীন একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে একরোগীকে ১৩০ টাকার ইনজেকশন পুশ করে জহুরুল ইসলাম রনি নামে এক ডাক্তার ২৫০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে ডাক্তার রোগীর স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পরে হট্টগোল শুরু হলে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে ডাক্তার কৌশলে সটকে পড়েন।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শুক্রবার কাওয়ালীপাড়া বাজারে পপুলার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
রোগীর স্বজন ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের স্ত্রী আলেকা বেগম কোমরের ব্যথা নিয়ে ডাক্তার দেখাতে আসেন ধামরাইয়ের নবগ্রাম (কাওয়ালীপাড়া) বাজারের পপুলার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে ৫০০ টাকা ভিজিট দিয়ে ডাক্তার মুহাম্মদ জহুরুল ইসলামকে (রনি) দেখান। এরপর তিনি নিজের সরবরাহ করা তিনটি ইনজেকশন পুশ করেন আলেকার মাংসপেশীতে। নেওয়া হয় ২৫০০ টাকা।
পরে ব্যাথা উপশমের ইনজেকশন ২৫০০ টাকা জানতে পেরে রোগীর স্বজন সোহেল মাহমুদ চেম্বারে গিয়ে ডাক্তারের কাছে জানতে চান কি কি ইনজেকশন পুশ করা হয়েছে। এতে ডাক্তার রনি উত্তেজিত হয়ে সোহেলের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এদিকে কি কি ইনজেকশন পুশ করা হয়েছে তা প্রেসক্রিপশনে উল্লেখ করেনি ডাক্তার রনি। পরে জানা যায় ওই ইনজেকশনের মূল্য ১২০-১৩০ টাকা। এক পর্যায়ে ডাক্তার রনি কৌশলে সেখান থেকে সটকে পড়েন।
পপুলার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শাহজাহান কবির বলেন, পরবর্তীতে ওই রোগীর কাছ থেকে এক হাজার টাকা নেওয়া হবে এই শর্তে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে আপস হয়ে গেছে।
সোহেল মাহমুদ জানান, ডাক্তারের সরবরাহ করা তিনটি ইনজেকশন পুশ করে ভিজিটসহ আড়াই হাজার টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করলে ডাক্তার রনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
রোগীর ভগ্নিপতি আবদুল মান্নান বলেন, কষাই ডাক্তার রনি অনেক রোগীকে ইনজেকশন পুশ করে দুই থেকে ১৫ হাজার টাকাও নিয়েছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে ডাক্তার জহুরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দশ লাখ টাকা ব্যয় করে লেখাপড়া শিখেছি। আমার চেম্বারে আসলে আমি রোগীর কাছ থেকে কত টাকা নেব এটা আমার বিষয়। এ ছাড়া তিনি বলেন, গরিবদের জন্য আমার চেম্বার নয়। তাদের জন্য সরকারি হাসপাতাল আছে।
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা গেছে, লাইসেন্স না থাকা পপুলার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কিছু কর্মচারী আছেন যারা রোগীদের ফুসলিয়ে ডাক্তারসহ নিজেরা হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
এদিকে প্রেসক্রিপশনপত্রে দেখা যায়, হাড়-জোড়া, বাত-ব্যাথা ও ডায়াবেটিস, ফুট-আলসার ও ট্রমা সার্জন ডা. মুহাম্মদ জহুরুল ইসলাম (রনি)। এতে আরো লেখা রয়েছে এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য), এমএস (অর্থোপেডিক)-কোর্স, সিসিডি বারডেম হাসপাতাল, ট্রমা সার্জারিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত (ইন্ডিয়া), ডব্লিউএইচও ফলো অন অর্থোপেডিক ট্রমা ম্যানেজমেন্ট ইন্ডিয়া। নিটোর (পঙ্গু হাসপাতাল) ঢাকা।
সূত্র- কালের কণ্ঠ অনলাইন
Leave a Reply