অবশেষে প্রায় দীর্ঘ ৩২ঘণ্টা পর বিদ্যুতের দেখা পেল সিলেট। এর ফলে দীর্ঘ সময়ের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেয়েছেন নগরীর কয়েকটি এলাকার নাগরিক। তবে এই বিদ্যুৎও চলছে পরীক্ষামূলক। কতক্ষণ থাকবে এরও নিশ্চয়তা নেই।
সূত্রে জানা যায়, সিলেটের প্রধান বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের দুর্ঘটনার পর বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে গোটা সিলেট বিভাগ। কয়েকটি জেলা ও উপজেলায় বিশেষ ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব হলেও সিলেট নগরী ও এর আশপাশে এলাকা ছিল বিদ্যুৎবিহীন। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আলো জ্বললো সিলেটের কয়েকটি এলাকায়। প্রথমে নগরীর আম্বরখানা ও টিলাগড় এলাকায় বিদ্যুৎ আসলেও পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা ২০ মিনিটের দিকে নগরীর জিন্দাবাজারসহ আশপাশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, সন্ধ্যা ৫ টা ৫৪ মিনিটের দিকে প্রথমে আম্বরখানা ও টিলাগড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। পরে জিন্দাবাজারসহ কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। দ্রুত বাকি সকল এলাকাগুলোতেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
তিনি বলেন, ভয়াবহ অগিকাণ্ড ঘটলেও ওই এলাকার ফিডগুলো কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করে এগুলো সচল করা হয়েছে।
বুধবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, গতকাল রাত থেকে প্রায় ৪০০ কর্মী কাজ করছেন। আজ দুপুরের আগে মেরামত করা কিছু পিলার পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে। যত দ্রুত সম্ভব বাকি এলাকাগুলো বিদ্যুতের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।
এর আগে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১১ টার দিকে আগুন লাগার পর বিদ্যুতবিহীন হয় সিলেট শহরসহ বিভাগের বেশ কয়েকটি অঞ্চল। এর পর প্রায় ৩০ ঘণ্টা চলে গেলেও আসেনি বিদ্যুৎ। আর তাতে সময়ে সময়ে বেড়েছে ভোগান্তি। বিশেষ করে সিলেট নগরে বাসা-বাড়ীতে দেখা দিয়েছে পানির তীব্র সংকট। প্রয়োজন মিটাতে লোকজন বালতি, ড্রাম কিংবা কলসি কাকে ছুটে চলছেন পানির সন্ধানে। যেখানে টিউবওয়েল আছে সেখানেই ভিড় করছেন মানুষ।
বুধবার নগরীর অধিকাংশ জায়গায় ঘোরে দেখা গেছে পানির সংকট। এ সংকট মিটাতে শিশু, কিশোর বৃদ্ধ, নারী থেকে শুরু করে সকল বয়সের মানুষ অন্যত্র ছুটছেন পানির জন্য। বিশেষ করে পাড়ার ভিতরে যেসব বাসায় জেনারেটর আছে সে বাসায় করছেন পানির জন্য মিনতি। আবার পাড়ার ভিতরে কোথাও টিউবওয়েল থাকলে মিলছে কিছুটা স্বস্তি। বাদ পড়ছে না পুকুর।
এদিকে পানির এ সংকটকে কাজে লাগিয়ে কিছু নিম্ন আয়ের মানুষ নেমেছেন উপার্জনে। বাসায় বাসায় পানি পৌঁছে দিয়ে করছেন উপার্জন। স্বাভাবিক সময়ে প্রতি ড্রাম পানি ১০ টাকা করে হলেও এখন সংকটের এ সময়ে ২৫ টাকা করে পৌঁছে দিচ্ছেন বাসায় বাসায়।
মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে সিলেটের আখালিয়ার কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে আগুন লাগার পর থেকে এই অবস্থা। আগুন লাগার দুই ঘণ্টা পর বেলা পৌনে একটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি এমন বাস্তবতায় এখন কেবল বিদ্যুতের জন্য অপেক্ষা।
Leave a Reply