নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে হতে পারে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এই খবরে চাঙ্গা হতে শুরু করেছে তৃনমূল রাজনীতি। ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যয় সিলেট বিভাগেও চলছে তোড়জোর। এর ব্যতিক্রম নয় দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নবগঠিত ১০নং কামালবাজার ইউনিয়ন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে আওয়ামীলীগ-বিএনপির একাধিক প্রার্থী ছাড়াও একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন। দলীয় প্রতীকে আসন্ন ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সংবাদে দলীয় মনোনয়ন পেতে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীগন।
জানা যায়, নবগঠিত ১০নং কামালবাজার ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর এটা হতে যাচ্ছে প্রথম নির্বাচন। প্রাক্তন মোল্লারগাও ইউনিয়ন বর্তমানের কামালবাজার ইউনিয়ন। কামালবাজার এলাকায় এক সময় জাতীয় পার্টির শক্তিশালী অবস্থান ছিল। তারপর কর্তৃত্ব চলে যায় আওয়ামীলীগের কাছে। কামালবাজার ইউনিয়নের বাসিন্দা আলী আহমদ সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক পরবর্তীতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর অনেকটা পাল্টে যায় কামালবাজারের রাজনীতি। আলী আহমদের নেতৃত্বে একসময়ের জাতীয় পার্টি ও আওয়ামীলীগের শক্তিশালী দূর্গ খ্যাত কামালবাজার বর্তমানে বিএনপির শক্তিশালী ঘাটিতে পরিনত হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কামালবাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে আওয়ামীলীগ থেকে একাধিক প্রার্থী সরব থাকলেও ইউনিয়নটিতে এখন পর্যন্ত প্রচারণায় রয়েছেন বিএনপির একক প্রার্থী। শেষ পর্যন্ত দলীয় কোন প্রার্থী না থাকলে বিএনপি থেকে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল মন্নানই একক প্রার্থী বলেই মনে করেন ইউনিয়ন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। তবে চেয়ারম্যান পদে লড়তে আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী মনোনয়নের জন্য জোর লবিংয়ের পাশাপাশি নিরব প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কামালবাজার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার মিয়া সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও অন্যান্য প্রার্থীরা ছাড় দিতে রাজী নয়। শেষ পর্যন্ত আওয়ামীলীগ থেকে একক প্রার্থী মনোনিত হলেও বিদ্রোহী প্রার্থী থাকতে পারে বলে আশংকা করছেন একাধিক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। ইউনিয়ন সভাপতি আনোয়ার হোসেন ছাড়াও আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেতে যারা লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মাসুক মিয়া, আব্দুর রব মিয়া, ফারুক মিয়া মেম্বার, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি সফিক মিয়া, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা একরামুল ইসলাম। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন এনাম আহমদ। চুড়ান্ত প্রার্থী জানতে হলে দলীয় মনোনয়ন পর্যন্ত অপেক্ষার ছাড়া কোন পথ নেই। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামীলীগ থেকে ইউনিয়ন সভাপতি আনোয়ার মিয়া ও বিএনপি থেকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মন্নানের মনোনয়ন লাভের সম্ভাবনা বেশী বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১১ সালের ৩০ জুন দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ১০নং কামালবাজার ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচন না হওয়ায় প্রশাসক দিয়ে চলছে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। ৬.৫৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ইউনিয়নটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৯৬৪৩ জন। ১৪টি গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত ইউনিয়নের মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৯টি। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর নবগঠিত কামালবাজার ইউনিয়ন পরিষদ শুধু একজন চেয়ারম্যানই নয়, পেতে যাচ্ছে ৯জন মেম্বার ও ৩জন সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বার। শেষ পর্যন্ত প্রথম নির্বাচনে কারা হতে যাচ্ছেন জনপ্রতিনিধি সেটা জানতে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২০২১ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ইউনিয়নের সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করা ইউনিয়ন পরিষদের সার্থকতা লাভ করবে আসন্ন নির্বাচনে। সাধারণ ভোটাররা নির্বাচিত করবে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের।
Leave a Reply