১৯৯৬ সালে প্রকাশিত প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান রেন্টুর লেখা “আমার ফাঁসি চাই” বই ছাপানোর অভিযোগে ছাপাখানা ১৯৭৬ সালের আইনে গ্রেফতার দেখানো হয় স্বপ্নকুঁড়ি প্রকাশনার মালিক (শফিকুল ইসলাম) (৫০) কে, পলাতক আছে তার বড় ছেলে ও প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী (মোজাহিদুল ইসলাম) (২২)।
খবর নিয়ে জানা গেছে “আমার ফাঁসি চাই ” বইটি ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হওয়ার পরপরই বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ সরকার বইটি নিষিদ্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে সকল নিষিদ্ধ বইগুলো থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলে নেয় যার আওতায় “আমার ফাঁসি চাই ” বইটিও পড়েছে। মামলা ও গ্রেফতারের বিষয়ে স্বপ্নকুঁড়ি ছাপাখানার মালিকের স্ত্রী (খন্দকার নাছিমা সুলতানার) কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান ২ মে ২০২১ তারিখে গালিমপুর ইউনিয়নের জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সভাপতি (এমএস জালাল) সাহেব তাদের কাছে “আমার ফাঁসি চাই ” বইটি দুই হাজার কপি ছাপানোর জন্য দিয়ে যায়। বইটি পড়ে দেশের বর্তমান রাজনীতি পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাদের নৈতিক দায়িত্বের জায়গা থেকে বইটি ছাপানোর সিদ্ধান্ত নেয় এবং কি তারা (মে ২৭ তারিখ) বইটি ডেলিভারি দিলে জালাল সাহেবরা বইটি বিতরণ শুরু করলে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তারপর থেকেই একের পর এক বিভিন্ন ফোন নাম্বার থেকে কলে হুমকি ধমকি আসা শুরু করে। পর্যায়ক্রমে (১০ জুন ২০২১ তারিখে) বরুড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বখতিয়ার সাহেবের নেতৃত্বে তাদের অফিস কারখানা ভাংচুর করা হয় এবং তাদেরকে মারধর করা হয় হত্যা ও গুমের হুমকি দেওয়া হয় তারপর আবার তাদের বাড়ি ঘরেও হামলা করা হয়,পরিবারের সদস্যদের নাজেহাল করা হয়। মি. শফিক সাহেবের স্ত্রী আরো অভিযোগ করে তাদের উপর এতো হামলা ভাংচুর করার পর পুলিশ প্রসাশনের কাছে বারবার সাহায্য সহযোগিতা চেয়েও পায়নি। ৯ জুলাই ২০২১ তারিখে তার স্বামী স্বপ্নকুড়ী প্রকাশনার মালিক শফিক সাহেবকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায় এবং তার ছেলে মোজাহিদ সাহেব বর্তমানে পলাতক। পরিবারটি এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছে বলে আমাদের সংবাদ প্রতিনিধির কাছে জানায়। এই বিষয়ে বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আজম সাহেবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বখতিয়ার সাহেবের অভিযোগের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে নিষিদ্ধ বই ছাপানোর অভিযোগে আমরা স্বপ্নকুড়ী ছাপাখানার মালিকদের মধ্যে (শফিক সাহেবকে) গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছি। আরেকজন মালিক তার বড় ছেলে মোজাহিদ সাহেবের বিরুদ্ধে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রেখেছি । মামলার বিষয়ে বখতিয়ার সাহেব বলেন “আমার ফাঁসি চাই “বইটি একটি নিষিদ্ধ বই। বইটি ছাপানোর জন্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে তাই তিনি মামলা করেছেন।
স্বপ্নকুঁড়ি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের এডভোকেট মারুফ সাহেব জানিয়েছে ‘‘আমার ফাঁসি চাই’’ বইটি কোনো নিষিদ্ধ বই নয়, এরপরও তার মক্কেলদের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মিথ্যা অভিযোগে হয়রানি করার জন্য পুলিশ ও বখতিয়ার সাবেক অতিউৎসাহী হয়ে মামলা করেছে। ৯ জুলাই পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে (শফিক সাহেবকে) জেল হাজতে ফেরন করেছে তার বড় ছেলে প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোজাহিদ সাহেবের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে রেখেছে, আশা করছি আমরা উচ্চ আদালতে ন্যায় বিচার পাবো. এদিকে স্বপ্নকুড়ী ছাপাখানার মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতারের কারণে এলাকায় জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় ১১ জুলাই ২০২১ তারিখে এলাকাবাসী ও সামাজিক সংগঠনগুলো এবং ছাপাখানা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে স্বপ্নকুঁড়ি ছাপাখানার মালিকদের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা মামলা তোলে নেওয়ার জন্য সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়।
Leave a Reply