যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী জো বাইডেন। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে তিনি এ পর্যন্ত ২৪৮টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন। ২৭০টি নিশ্চিত হলেই প্রেসিডেন্ট হন যেকোনো প্রার্থী।
আর মাত্র ২২টি ইলেকটোরাল ভোট পেলেই জয় নিশ্চিত হবে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী জো বাইডেন। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৪টি ইলেকটোরাল ভোট। খবর এপির।
মঙ্গলবার দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ শেষে বুধবার ফল ঘোষণা করা হয়েছে। সাবেক এই ভাইস প্রেসিডেন্ট উইসকনসিন ও মিশিগানে এগিয়ে থাকায় হোয়াইট হাউসে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যদিও ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই দুই আসনে জয়ী হয়েছিলেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রাতভর চেষ্টার পর উসকনসিনের ভোট গণনা শেষ করেন কর্মকর্তারা। রাজ্যটির ১০টি ইলেকটোরাল ভোটই বাইডেনকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
যদিও ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগেই অনেকটা আজগুবি কায়দায় নিজের বিজয় ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এমনকি ভোট গণনা বন্ধে তিনি সুপ্রিমকোর্টের দারস্ত হওয়ার সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছিলেন।
উইসকনসিনে বাইডেনের বিজয়ে ট্রাম্পের দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে দুই দলের প্রচার শিবির থেকেই বিজয়ের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। ট্রাম্পের প্রচার ব্যাবস্থাপক বিল স্টেপিন বলেন, যদি আমরা সব বৈধ ভোট গণনা করতে পারি, তবে বিজয়ী হবো।
নির্বাচন পরবর্তী সময়ে মেইল ভোট গণনা নিয়ে আইনি লড়াইয়ের পরিস্থিতির তৈরি করেন তিনি। মিশিগানের ভোট গণনা বন্ধ করতে তার প্রচার শিবির মামলাও করেছে।
এক বিবৃতিতে বিল স্টেফেন বলেন, ব্যালট খোলা ও গণনা প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে বিভিন্ন স্থানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রচার শিবিরকে অর্থবহ সুযোগ দেয়া হয়নি।
এ সময়ে বাইডেনের বিজয়ের পথে থাকার কথা জানান তার প্রচার ব্যবস্থাপক জেনিফার ও’মেলি ডিলন। তার জ্যেষ্ঠ আইন উপদেষ্টা বব বাউয়ার বলেন, বৈধ ভোটাধিকার প্রয়োগকে অবৈধ হিসেবে উপস্থাপনের কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, আমরা ভোটাধিকারকে সুরক্ষা দিতে যাচ্ছি। যে ভোটে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হবেন। আর যে কোনো প্রতিকূলতা মোকাবেলায় বাইডেনে আইনি দল প্রস্তুত বলেও তিনি জানান।
বুধবার ক্ষুদেব্লগ টুইটারে ভিত্তিহীনভাবেই ভোট গণনা প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে যাচ্ছিলেন ট্রাম্প। কয়েক ঘণ্টা পর হোয়াইট হাউসে গিয়ে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। যদিও ভোট গণনা শেষ হতে তখন অনেক বাকি ছিল।
নির্বাচন প্রক্রিয়ার অস্বাভাবিক সমালোচনা করার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আমরা নির্বাচনে জয়ী হতে প্রস্তুত। আমরা জয়ী হয়েছি।
ট্রাম্প বলেন, আমাদের দেশে এটা বড় ধরনের প্রতারণা। সবকিছু সঠিক নিয়মে চলার জন্য আমরা আইনের বাস্তবায়ন চাই। কাজেই আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছি। আমরা সব ভোটগণনা বন্ধ করতে চাচ্ছি।
তবে নিজের এসব দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তিনি।
মঙ্গলবার রাতে নির্বাচন শেষ হলেও কোনো কোনো রাজ্যে ভোটগণনায় অনেক বেশি সময় লেগেছে। তিক্ত নির্বাচনী প্রচারের পর এই অনিশ্চয়তায় আমেরিকানদের ভেতরে উদ্বেগ কাজ করতে শুরু করে।
এমন এক সময় এই নির্বাচন অনুষ্ঠান ও ফল ঘোষণা করা হলো, যখন দুই লাখ ৩১ হাজার মার্কিন নাগরিক প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মারা গেছেন। লাখ লাখ আমেরিকান কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন।
এছাড়া পুলিশের নৃশংসতা ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কয়েক মাস ধরে তুমুল বিক্ষোভ চলছে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটিতে।
Leave a Reply