নতুন বছরের শুরুতেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার আশায় ছিল জেলা আওয়ামীলীগ। তবে প্রথম দিনে ঘোষণা না হলেও কাজ এগিয়েছে অনেক। শেষ মুহুর্তে ঘাটে এসে তরী ডুবালেন ১১জন। প্রস্তাবিত এবং চুড়ান্তপ্রায় কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন তারা। ফলে তাদের স্থলে যোগ হচ্ছেন নতুন মুখ। সব মিলিয়ে নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে পূর্ণাঙ্গ কমিটি পাচ্ছে সিলেট জেলা আওয়ামীলীগ। আর এমনটাই প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।
সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ করেই গেল বৃহস্পতিবার ডাক পড়ে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের ৪ শীর্ষ নেতার। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় রুদ্ধদার বৈঠক। সেখানেই প্রস্তাবিত তালিকা থেকে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে বাদ দেয়া হয় ১১ জনকে। তাদের স্থলে নতুনদের অন্তর্ভূক্ত করে পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হয়। এই বৈঠকেই চূড়ান্ত হয়ে যায় জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এখন কেবল ঘোষণার অপেক্ষা।
একটি সূত্রে জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যে কমিটি জমা দিয়েছিলেন সেটি থেকে বাদ পড়েছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দুইজন,সহ-সভাপতি ১ জন, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ১ জন ও সদস্য ৫ জন। বাদ পড়াদের বিরুদ্ধে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়তা, স্থায়ীভাবে প্রবাসে অবস্থান, বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্টতাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে বাদ পড়াদের তালিকায় যারা রয়েছে তাদের মধ্যে থেকে হয়তো ২/৩ জন কমিটিতে থেকে যেতে পারে বলেও জানায় ঐ সুত্র। এছাড়ও নতুন করে আরো কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন বলেন জানা যায়। সবকিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারি মাসের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন হতে পারে।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, নুরুল ইসলাম নাহিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, শাখাওয়াত হোসেন শফিক, সদস্য ডা. মুশফিক চৌধুরী, আজিজুস সামাদ ডন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৫ই ডিসেম্বর ঐতিহাসিক আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে। ওই সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন। জেলার সভাপতি হয়েছিলেন এডভোকেট লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান। মহানগরের সভাপতি হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন। সম্মেলনের পর স্বল্প সময়ের মধ্যে কমিটি গঠনের নির্দেশনা থাকলেও করোনার কারণে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাবিত কমিটি জমা দেন। আর কমিটি দু’টি জমা দেয়ার পর থেকে সিলেটে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। মহানগর ও জেলা কমিটির ২৫-২৬ জন পদবিধারী ও সদস্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী কেন্দ্রের কাছে তাদের লিখিত অভিযোগ জমা দেন। এসব অভিযোগ আমলে নেয় আওয়ামী লীগ। চালায় গোপন তদন্ত। এরপর গত বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের দুই শীর্ষ নেতাকে কেন্দ্রে ডাকা হয়। শেষ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটির চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ দেয়া হল ১১ জনকে।
Leave a Reply