বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে চান ২০ দলীয় জোটের নেতারা। তারা জোটনেত্রীর সঙ্গে সবশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ভবিষ্যত কৌশল নির্ধারণসহ অন্যান্য বিষয়ে কথা বলতে চান।
রোববার রাতে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে মিলিত হন বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটটির শীর্ষ নেতারা। এ সময় এই ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটের নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নার সাক্ষাতের বিষয় তুলে ধরে জোটের একজন নেতা বৈঠকে বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতা যদি নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন তাহলে ২০ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতা হিসেবে আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারব না কেন? এ সময় শরিক দলের আরেক নেতা প্রস্তাব করেন, ঢালাওভাবে সব নেতার সাক্ষাতের সুযোগ না হলেও অন্তত জোটের সিনিয়র কয়েকজন নেতা গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
জবাবে জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান বলেন, এটা (খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত) হতে পারে। এ বিষয়ে তিনি দলীয়ভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন। জোটের সমন্বয়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকে অংশ নেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের নির্বাহী সভাপতি আল্লামা নূর হোসেন কাসেমী, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আবদুর রকিব, এলডিপির একাংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ পিপলস লীগের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গরীবে নেওয়াজ, ন্যাপ ভাসানী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবু তাহের চৌধুরী, খেলাফত মজলিশের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের ও বাংলাদেশ ন্যাপের একাংশের চেয়ারম্যান শাওন সাদেকী।
এছাড়া এলডিপির একাংশের সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ অল্প সময়ের জন্য বৈঠকে অংশ নিলেও তিনি কোনো কথা বলেননি।
বৈঠক সম্পর্কে জোটশরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, দেশের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবেন।
শরিক দলের আরেক নেতা জানান, বৈঠকে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে। করোনাভাইরাস, চিকিৎসা ব্যবস্থার দুরবস্থা, কৃষকদের ঋণ প্রণোদনা দেয়া, শহর ছেড়ে গ্রামে ফেরা মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পাটকল বন্ধ ও শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেয়া, নতুন অর্থবছরের উচ্চাভিলাষী বাজেট প্রত্যাখ্যান করার বিষয়টিও উঠে এসেছে। এছাড়া সীমান্তে বিএসএফের বাংলাদেশি হত্যার ঘটনায় সরকার চুপ থাকার প্রতিবাদ জানানো হয়। সূত্র জানায়, বৈঠকে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের নতুন আইনকে কালো আইন আখ্যা দেন নেতারা। করোনা মহামারীর মধ্যে এ ধরনের আইন করার বিষয়টিকে দুরভিসন্ধিমূলক বলে মত দেন তারা।
কৃষকদের ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়ার জন্য সরকারি প্রণোদনার টাকা পেতে নানা ধরনের শর্ত দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে জোটের নেতারা আলোচনা করেন। তারা বিনাশর্তে কৃষকদের ঋণ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply