সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ মামলার এজাহারভূক্ত ৬ আসামির মধ্যে ৫ জনকেই ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আইনুদ্দিন ও রাজন নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
এজাহারভূক্ত আসামিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কেবল তারেকুল ইসলাম তারেককেই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
গত শুক্রবারের গণধর্ষণের ঘটনায় শনিবার নির্যাতিতা গৃহবধুর স্বামী শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, এমসি কলেজের প্রধান ফটক থেকে তাদের জিম্মি করে যারা ধরে নিয়ে আসেন তাদের মধ্যে তারেকুল ইসলাম তারেকও ছিলেন। এসময় নির্যাতিত দম্পত্তির প্রাইভেট কারের দখল নেন তারেক। তিনি প্রাইভেট কার চালিয়ে তাদের ছাত্রাবাসে নিয়ে আসেন। এরপর ধর্ষণ ও নির্যাতনেও অংশ নেন তারেক।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্তি উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোর্তিময় সরকার বলেন, আমরা মামলার এজাহারভূক্ত সব আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারেককে গ্রেপ্তারেও বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে। আশা করছি দ্রুতই তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
সর্বশেষ গতকাল সোমবার রাত ১১ টায় জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর থেকে এই মামলার আসামি মাহফুজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে কানাইঘাট থানা পুলিশ। এরআগে রোববার সকালে ছাতক থেকে মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও মাধবুপর থেকে অর্জুন লস্করকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার রাতে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থেকে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
একই রাতে হবিগঞ্জ সদর থেকে মামলার এজাহারভূক্ত আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই রাতেই সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মো. আইনুদ্দিন ও মো. রাজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৯। এজাহারে নাম না থাকলেও এই ঘটনার পর থেকে আইনুদ্দিন ও রাজনের নাম উচ্চারিত হচ্ছে। গ্রেপ্তার হওয়া অন্য আসামিরাও এ ঘটনায় আইনুদ্দিন ও রাজন জড়িত বলে জানিয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া সকলেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধু। রাত সাড়ে ৮টার দিকে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনায় তরুণীর স্বামীর দায়ের করা মামলায় আসামিরা হলেন-সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাই নিবাসী তাহিদ মিয়ার পুত্র সাইফুর (২৮), সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাইফুর, অর্জুন ও রবিউলকে সোমবার পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও মঙ্গলবার রনি, আইনুদ্দিন ও রাজনকেও পাচঁ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
Leave a Reply