যুক্তরাজ্যে নতুন করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে তিনদিনের ব্যবধানে ফের লন্ডন থেকে ১৬৭ যাত্রী নিয়ে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলো বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ। যাদের ১৪৪ জনই সিলেটের। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টা ১৫ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বিমান অবতরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সোমবার সোয়া ১২ টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ২০২ নম্বরের ফ্লাইটটি অবতরণ করা এই ফ্লাইটে আসা ১৬৭ যাত্রীর মধ্যে ১৪৪ জনই সিলেটের। বাকী ২৭ যাত্রীকে নিয়ে বেলা সোয়া একটার দিকে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ওসমানী বিমান বন্দর ছাড়ে উড়োজাহাজটি।
এর আগে নতুন ধরণের এবং অধিক সংক্রামক করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে গত ২৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ বিমানের এইটি ফ্লাইট ২০২ যাত্রী নিয়ে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যে ফ্লাইটের ১৬৫ জন যাত্রীই সিলেটের ছিলেন।
এদিকে নতুন ধরণের এবং অধিক সংক্রামক করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। ভারতও যুক্তরাজ্য থেকে আসা বিমানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখনও সে ধরণের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
যদিও গত বুধবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা খফরুল ইসলাম আলমগীর যুক্তরাজ্যের সাথে বিমান যোগাযোগ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। তবে এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল এখনই বন্ধ করছে না সরকার।
মন্ত্রী জানান, যুক্তরাজ্য থেকে আসা সকল যাত্রীর জন্য বিমানবন্দরে আলাদা লাইন করা হবে। যাদের কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকবে না, তাদের সেখানেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এরপর সেখান থেকেই তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে।
যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনা ছড়িয়ে পড়ার কারণে বিমান চলাচল বন্ধ করা হবে কী না এই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই তিনদিনের ব্যবধানে ফের লন্ডন থেকে ১৬৭ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইট এলো সিলেটে।
তবে এই ফ্লাইটে সিলেটে নামা ১৪৪ জন যাত্রীর করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ।
তিনি বলেন, করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া এখন কাউকেই বিমানে উঠকে দেওয়া হয় না। আবার দেশে আসার পরও মেডিকেল টিম সব যাত্রীদের করোনা সনদ পরীক্ষা করে। ফলে করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া কারোরই দেশে আসার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের আমাদের টিম পরীক্ষা করছে। তাদের সকলের করোনা নেগেটিভ সনদ রয়েছে।
বিমানবন্দরের মেডিকেল টিমের সমন্বয়ক ডা সিরাজুম মুনির বলেন, সব যাত্রীদের করোনা সনদ পরীক্ষা করা হচ্ছে। কারো সনদ না থাকলে তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যে এখন অধিক সংক্রামক আরও নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে দেশটিতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিবেশী ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এদিকে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের মধ্যেও অধিকাংশই সিলেটের বাসিন্দা। এ কারণে বর্তমানে সিলেট অঞ্চলে করোনার নতুন স্ট্রেইনের সংক্রমণ ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
Leave a Reply