সিলেট বিভাগে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী মেয়রপ্রার্থীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।দলীয় শাস্তির খড়গ মাথায় নিয়ে পাঁচটি পৌরসভায় স্বতন্ত্র মেয়র পদে ভোটে লড়ছেন আওয়ামী লীগের ১০ নেতা। এদের মধ্যে বর্তমান ও সাবেক চার মেয়রও রয়েছেন।
দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে চারজনকে বহিস্কারও করা হয়েছে।তাদের ব্যাপারে কঠোর মনোভাবও দেখানো হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতারা হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছেন, বিদ্রোহীদের আর কখনোই দলের মনোনয়ন দেয়া হবে না। তারপরও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন নেই।ভোটের মাঠ থেকে ফেরানো যাচ্ছে না তাদের।
নির্বাচন কমিশনের তফসিল মতে, দ্বিতীয় ধাপে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক ও হবিগঞ্জের মাধবপুর ও নবীগঞ্জ পৌরসভায় ১৬ জানুয়ারি এবং তৃতীয় ধাপে সিলেটের গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার পৌরসভায় ৩০জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ।
দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় পৌর নির্বাচনে বিভাগের ছয়টি পৌরসভার মধ্যে ৩টিতে অন্তত ৬ জন বিদ্রোহী প্রার্থী নৌকার বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর দ্বিতীয় ধাপে বিভাগের ৩টি পৌরসভায় অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে দু’টিতে ভোটে রয়েছেন দলের চার বিদ্রোহী।বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় দল সমর্থিত প্রার্থীরা যেমন চরম অস্বস্তিতে রয়েছেন, তেমনে বিপাকে পড়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরাও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপের ভোটে কমলগঞ্জ পৌরসভায় নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে লড়ছেন পৌরসভার বর্তমান মেয়র মো. জুয়েল আহমেদ।
এ পৌরসভায় স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়েছেন জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি, তিনবারের নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন। তিনি নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।দল থেকে তাকে বহিস্কার করা হলেও নির্বাচন থেকে সরেননি তিনি।
একই পৌরসভায় দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে প্রার্থী হওয়ায় বহিস্কৃত হয়েছেন উপজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি হেলাল মিয়া।তিনি ভোটে লড়ছেন জগ প্রতীক নিয়ে।
কুলাউড়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও উপজেলা শ্রমিকলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ।
নৌকা প্রতীকের এ প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচন করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মেয়র শফি আলম ইউনুস। তাকে এরই মধ্যে বহিষ্কার করেছে দল। এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী হলেন প্রবাসী শাহজাহান মিয়া।
হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরসভায় নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শ্রীধাম দাশগুপ্ত।
এ পৌরসভায় দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক দুইবারের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মো. মুসলিম ও বর্তমান মেয়র হিরেন্দ্র লাল সাহার ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পঙ্কজ সাহা।
তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে গোলাপগঞ্জে নৌকার কাণ্ডারি হয়েছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহেল আহমদ।
আওয়ামী লীগ মনোনীত এ মেয়রপ্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে লড়ছেন দলের পৌর কমিটির সভাপতি বর্তমান মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল ও পৌর কমিটির সাবেক প্রচার সম্পাদক, সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু।
জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতীক নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা হাজী খলিল উদ্দিন।
তার সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ফারুক আহমদ ও উপজেলা যুবলীগের সদ্য পদত্যাগী আহ্বায়ক আবদুল আহাদ। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে যুবলীগের আহ্বায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হন আহাদ।
Leave a Reply