নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ৩য় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে সিলেট বিভাগের ৩টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ শনিবার। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর পক্ষ থেকে ভোট গ্রহণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সিলেটের গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার পৌরসভার মোট ৩৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে প্রায় সবকটি ভোটকেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরেই প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। নেয়া হয়েছে ৪ স্তরের নিরাপত্তা বলয়। যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে মাঠে থাকবেন আড়াই হাজারেরও বেশী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্য। থাকবে সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যও। এছাড়া বিভাগের ৩ পৌরসভায় ৩জন জ্যুাডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি মাঠে রয়েছেন ৩৬জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তাদের দেয়া হয়েছে তাৎক্ষনিক অপরাধের বিচারের ক্ষমতা। ভোট কেন্দ্রের সার্বিক নিরাপত্তা, শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ দায়িত্ব পালন করবেন। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে আশাবাদী প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন। মৌলভীবাজারে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষ থেকে নির্বাচন বয়কটের হুমকী দিলেও গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জে অভিযোগ নেই কোন প্রার্থীর।
সূত্রে জানা যায়, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মোট ভোটার ২২ হাজার ৯১৬ জন। পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ৬৯৪ জন ও ১১ হাজার ২২২ জন হলেন মহিলা ভোটার। জকিগঞ্জ পৌরসভার মোট ভোটার ১২ হাজার ৩৪৫ জন। পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৩ জন ও মহিলা ভোটার ৬ হাজার ৩৪২ জন। মৌলভীবাজার পৌরসভার মোট ভোটার ৪৩ হাজার ৪৪৬ জন। পুরুষ ভোটার ২২ হাজার ৭৫০ জন ও মহিলা ভোটার হলেন ২০ হাজার ৬৯৬ জন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৩টি পৌরসভায় বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় আড়াই হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট পৌর এলাকাজুড়ে থাকছে ৪ স্তরের নিরাপত্তা বলয়। গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ৯টি, জকিগঞ্জ পৌরসভার ৯টি ও মৌলভীবাজার পৌরসভার ১৮টি ভোট কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ। বিভিন্ন কারণে সবকটি ভোটকেন্দ্রকেই অতিরিক্তি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ। বিগত ২ ধাপের নির্বাচনের চাইতে ৩য় ধাপের এই ৩ পৌর নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা।
সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি পৌরসভার জন্যে ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য দেয়া হয়। এই হিসেবে ৩ পৌরসভায় শুক্রবার থেকে নেমেছে ৩ প্লাটুন বা ২৫০ জন বিজিবি সদস্য। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে দায়িত্ব পালন করবেন তারা। এছাড়া প্রতিটি পৌরসভায় রয়েছে র্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স ও রিজার্ভ টিম। ৮ সদস্যের স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে নিয়মিত টহলে। রিজার্ভ থাকছে আরো ৮ সদস্যের অপর টিম। সাদা পোশাকেও মাঠে থাকছেন র্যাবের একাধিক টীম। ৩ পৌরসভায় প্রায় ২০০ র্যাব সদস্য মাঠে থাকবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ৫ জন পুলিশ, আনসারসহ ১৮ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটকেন্দ্রের বাইরে একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে মোবাইল টিম, আরেক পরিদর্শকের নেতৃত্বে রিজার্ভ টিম সার্বক্ষণিক মোতায়েন থাকছে। এছাড়াও, সাদা পোশাকেও থাকছেন পুলিশের একাধিক টীম। প্রতিটি পৌরসভায় শুধু পুলিশ থাকছেন ২৫০ করে।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোঃ লুৎফুর রহমান বলেন, দুটি পৌরসভা নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে আমাদের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ১৮টি কেন্দ্রে প্রায় ৫শ পুলিশ ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিটি কেন্দ্রে ১০ জন এবং ঝুঁিকপূর্ণ কেন্দ্র সমূহে ১৫জন করে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন।
এব্যাপারে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে। ৩ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ৫ শতাধিক পুলিশ ও আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক মাঠে সক্রিয় থাকবে।
Leave a Reply