1. sylpe2019@gmail.com : Nongartv :
  2. regularmd@gmail.com : Suhag Rana : Suhag Rana
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৯ অপরাহ্ন

চালের দাম বাড়ছেই, বেশামাল তেলের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেটের সময় শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

দেশের বাজারে চালের দামের অস্থিরতা কাটাতে ভারত থেকে চাল আমদানি হলেও বাজারে এর প্রভাব নেই। দুই মাস ধরে ধাপে ধাপে চাল ও তেলের দাম বৃদ্ধি হয়ে এখন তা ক্রেতাসাধারণের নাগালের বাইরে চলে গেছে। গত সপ্তাহে সরকারি-বেসরকারিভাবে ভারত থেকে মোট ১ লাখ ১১ হাজার ৫২০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হলেও এ সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চাল ও তেলের দাম। সেই সাথে ধীরে ধীরে বাড়ছে সবজির দামও। এছাড়া আটা, ময়দা, পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও ডাল কিনতে গিয়েও হিমশিম খাচ্ছে মানুষ।’

সিলেটের পাইকারী বাজারে চালের দাম বেড়েছে বস্তা প্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। খুচরা বাজারে সাধারণ মানের আতব চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায় কেজি। অস্থিরতা বিরাজ করছে সয়াবিন তেলের তেলের বাজারেও। খুচরা ১ লিটার এখন ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নিকট অতীতে চালের বাজার এতোটা অস্থিতিশীল হয়নি। অনুসন্ধানে জানা যায়, সিন্ডিকেটের কবলে চাল ও তেলের বাজার। বাজারের লাগাম এখন ১৫/১৬টি বড় সিন্ডিকেট গ্রুপের হাতে। তাই চালের দাম কমছে না। আমদানিকৃত চাল বেশির ভাগই মজুদ করে রাখা হয়েছে। তাদের নির্ধারিত দামে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পণ্য দিচ্ছে তারা। সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারী চালের আরত কালীঘাট বাজারঘুরে ব্যবসায়ীরে সাথে কথা বলে জানা যায়, চালের বাজার এখন আর চাল ব্যবসায়ীদের হাতে নেই। এই ব্যবসায় নেমেছে বসুন্ধরা, স্কয়ার, সিটি, এসিআই, মজুমদার গ্রুপসহ ১৬টি বড় বড় ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া এখন দেশে যেসব এলসি খোলা হয়েছে সবগুলোই সিদ্ধ চালের। স্থানীয় বাজারে চালের সংঙ্কট রয়েছে। তাই বাজারে আতব চালের দাম কমছে না। চিকন চালের আমদানি না হলে বাজার স্বাভাবিক হবে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

একই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে তেলের বাজারও। তাই গত কয়েক মাসে তেলের দাম লিটার প্রতি ৮০ থেকে ১৪০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক লিটার রূপচাঁদা বোতলজাত সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) এখন ১৪০ টাকা। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বাজারে ফ্রেশ ও তীর ব্র্যান্ডের এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের এমআরপি এখন ১৩৫ টাকা এবং পুষ্টি ও বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের দাম এখন ১৩০ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলের গায়ে লেখা রয়েছে রূপচাঁদার তেলের দাম ৬৮৫, ফ্রেশ, তীর ও পুষ্টির দাম ৬৫৫ এবং বসুন্ধরার দাম ৬৫০ টাকা। তবে ক্রেতারা এর চেয়ে একটু কম দামে কেনেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু বোতলজাত সয়াবিন তেলই নয়, খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও ব্যাপক চড়া। বাজারে ১১৫-১২০ টাকা লিটারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। আর পাম তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১০৫-১১০ টাকা দরে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত বছরের এ সময়ের তুলনায় সয়াবিন তেলের দাম এখন ১৯-২৬ শতাংশ বেশি।
আর দুই মাস পরেই রমজান। বিষয়টি মাথায় রেখে বাজারে চাল ও ভোজ্য তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার নগরীর কালীঘাট চালের পাইকারী বাজার ঘুরে দেখা যায়, দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাশূণ্য চালের বাজার। বাজারে চালের স্টক কম। স্থানীয় বাজারে তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম সংকট। তাদের নির্ধারণ করা দামেই কিনতে হচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। কয়েক বছর আগেও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে মান ভেদে ৪ শ’ থেকে ৫শ’ টাকা মন ধান বিক্রি করতো কৃৃষকরা। সেই ধানের মণ এখন ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে চালের স্টক কম। দুই একটা চালের দাম কমেছে এছাড়া বাকি সবগুলোর দাম রয়েছে অপরিবর্তীত। পাইকারী বাজারে মান ভেদে মোটা ও চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন মোটাচাল সিদ্ধ ১৭শ’ ৩০ টাকা থেকে ১৭শ’ ৮০ টাকা, মালা সিদ্ধ ২৩শ’ ৫০ টাকা থেকে ২৪শ’ ৫০ টাকা, মিনিকেট আশুগঞ্জ ২৪শ’ ৫০ টাকা থেকে ২৬শ’ ৫০ টাকা। চিকন চাল স্থানীয়- ২৯ (পুরানো) ২৪শ’ ৫০ টাকা থেকে ২৫শ’ ৫০ টাকা, ২৮ (পুরানো) ২৬শ’ ৫০ টাকা থেকে ২৭শ’ টাকা, আশুগঞ্জের শিশির (পুরানো) ২৬শ’ ৫০ টাকা থেকে ২৬শ’ ৫০ টাকা, হীরা (পুরানো) ২১শ’ ৫০ থেকে ২২শ’ টাকা, স্বর্ণা (নতুন) ১৯শ’ ৮০ থেকে ২ হাজার ৬০ টাকা, রঞ্জিত ৪৯ (নতুন) ২ হাজার থেকে ২১ শ’ ৫০ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালীঘাটের এক ব্যবসায়ী জানান, বাজার এখন আর আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। আমরা আগে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতাম। বসুন্ধরা, এসিআই, স্কয়ার, সিটির মত বড় বড় ব্যবসায়ীক গ্রুপ এখন চালের ব্যবসায় নেমেছে। চাল আমদানি হলেও দাম কমছে না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে যারা কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে রেখেছে তারাই বড় একটা অংশ এলসি করেছে। তারা আমদানিকৃত চাল স্টক করে রেখেছে। এখনি যদি সিন্ডিকেটের যশোরের নয়াপাড়া, নওগাঁ মিলে অভিযান পরিচালনা করা হয় তাহলে কয়েক লক্ষ মেট্রিকটন চাল উদ্ধার হবে। বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সাধারণ ভোক্তাদের হয়রানি করছে। তাদের নির্ধারিত দামে আমরা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কিনতে বাধ্য। বিগত দিনেও বাজারের এমন খারাপ পরিস্থিতি হয়নি। ওয়ান ইলিভেনের সময়টাতেও আমরা এমনটা লক্ষ্য করিনি।
এব্যাপারে সিলেট কালীঘাট চাল বাজার ব্যবসায়িক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ জানান, বাজারে চালের মজুদ কম। সরকার সিদ্ধ চালের এলসি খুলেছে। সিলেটে সিদ্ধ চালের চাহিদা কম। আতব চালের এলসি খোলার আগ পর্যন্ত বাজার অপরিবর্তীত থাকবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© 2020 Nongartv.com . Design & Development by PAPRHI
Theme Customization By Freelancer Zone