করোনার প্রভাবে থমকে আছে শিক্ষা ব্যবস্থা। বাতিল হয়েছে পিইসি, জেএসসিসহ সমমানের পরীক্ষা। কিন্তু থমকে আছে এইচএসসি পরীক্ষা। কবে হবে পরীক্ষা? শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরাও মিটিংয়ে বসেছিলেন গত বৃহস্পতিবার। পরীক্ষা হবে এটা বলা হলেও কবে হচ্ছে তা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না কেউই।
গত বৃহস্পতিবারের বোর্ড চেয়ারম্যানদের বৈঠকের পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে হচ্ছে না এইচএসসি পরীক্ষা। গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, এইচএসসি পরীক্ষা হবে না এই মর্মে সরকার কোনো রকমের সিদ্ধান্ত নেয়নি। পরীক্ষার্থীদের বারবার বলা হচ্ছে তারা যেন লেখাপড়া চালিয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এইচএসসি পরীক্ষার তারিখ জানতে উদ্বিগ্ন প্রায় ১৪ লাখ পরীক্ষার্থী।
গত বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যানদের বৈঠকের আগে বলা হয় এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সভা শেষে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক জানান, এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
তবে এই সভার মূল এজেন্ডা ছিল এইচএসসি পরীক্ষা। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হলেও পরবর্তী ক্লাসে কীভাবে উত্তীর্ণ করা হবে সে বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। শিক্ষার্থীদের নিজস্ব প্রক্রিয়ায় পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করবে। এটি করতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় এজন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করা হবে। সেটি অনুসরণ করে পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হবে।
এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আব্দুল আলীম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কী কী পদ্ধতিতে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পরীক্ষা নেয়ার জন্য প্রশ্ন ও উত্তরপত্র প্রস্তুত রয়েছে। কবে পরীক্ষা নেয়া হবে সরকার সিদ্ধান্ত ঘোষণা দিলে আমরা পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, এখন পাবলিক পরীক্ষা আগের মতো নেয়া সম্ভব নয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এক বেঞ্চে একজন বা দুজন করে পরীক্ষার্থী বসানো হবে। পরীক্ষাকেন্দ্র স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে এ পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। সব শিক্ষা বোর্ডগুলোকে পরীক্ষা সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
১৭ই মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ঘোষণার পর কয়েক দফা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩রা অক্টোবর পর্যন্ত। করোনার সেকেন্ড ওয়েবের শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে শীতে। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক কিছুদিন আগে বলেন, করোনার সেকেন্ড ওয়েব শুরু হয়ে গেছে। এ ছাড়াও এমতাবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলার বিষয়ে মত দেন শিক্ষাবিদরা।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, করোনায় সঙ্গত কারণেই পৃথিবীর অনেক দেশেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেহেতু ভাবছে অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। আমার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ের শিক্ষার্থী ছিলাম আমাদের এমন কোনো ক্ষতি হয়ে যায়নি। তবে এই পরিস্থিতিতে খুললে কী হবে? বিশ্বের অনেক দেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর অনেক হারে শিক্ষার্থী সংক্রমিত হয়েছে। আর এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ আছে। তবে এটাও ঠিক এইচএসসি পরীক্ষাই সবকিছু নয়।
Leave a Reply