ভারত-পাক সীমান্তে এলওসি বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে পাকিস্তানি সেনার আক্রমণে তিনজন ভারতীয় সেনা জওয়ান নিহত হয়েছেন। ভারতীয় সেনা সূত্রে এ খবর জানানো হয়েছে। পাকিস্তান সেনার কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, সে বিষয়ে এখনো পর্যন্ত পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। ভারত বলেছে, এর উপযুক্ত জবাব পাবে পাকিস্তান।
দুটি পৃথক সংঘর্ষে তিনজন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচজন। তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সেনা সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরেই সীমান্তে প্রবল গুলি-গোলা ছুড়ছে পাকিস্তান। ভারতীয় সেনার পোস্ট লক্ষ্য করে মর্টার ছোড়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। তারই আঘাতে কাশ্মিরের কুপওয়ারা জেলার নওগাম সেক্টরে দুইজন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
অন্য দিকে, কাশ্মিরের পুঞ্চ সেক্টরেও একই ধরনের হামলার ঘটনায় এক সেনা জওয়ান নিহত হন এ দিন সকালেই। সেখানেও একজন আহত হয়েছেন।
সেনার মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই ঘটনার পরে ভারতও পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দিয়েছে। তবে ভারতের হামলায় পাকিস্তানের কোনো সেনার নিহত বা আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
ভারতের অভিযোগ, গত এক বছরে তিন হাজার বার পাকিস্তানি সেনা সীমান্তে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। কিছু দিন আগেও পুঞ্চ সেক্টরে দুই দেশের সেনার সংঘাত হয়েছিল। দুই পক্ষই সীমান্তের অন্যপ্রান্তে বিপুল পরিমাণ গোলাগুলি চালিয়েছিল। তবে সেই ঘটনায় কারো মৃত্যু হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বৃহস্পতিবারের ঘটনা বড় হয়ে গেল। তিনজন ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ায় ভারত পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করবে। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানকে এর উত্তর দেবে ভারতীয় সেনা।
একদিকে লাদাখে চীনের সাথে ভারতীয় সেনার সংঘাত চলছে। গালওয়ানে ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছিল। এ বার পাকিস্তান সীমান্তে ফের সেনা জওয়ান নিহত হলেন।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সেনাবাহিনীর মনোবল খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাহিনীর কেউ নিহত হলে তার উপযুক্ত জবাব দিতে না পারলে বাহিনীর মনোবল ভেঙে যায়। গালওয়ানের পর ভারতীয় সেনা চীনকে সেভাবে উত্তর দিতে পারেনি। এবার পাকিস্তান সীমান্তে ক্ষয়ক্ষতির পরে সেনা আরো বেশি করে উত্তর দিতে চাইবে। ফলে সীমান্তে আপাতত উত্তেজনা প্রশমনের কোনো সম্ভাবনা তারা দেখতে পাচ্ছেন না।
সূত্র : ডয়চে ভেলে
Leave a Reply