বাংলাদেশে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে যেগুলো আমাকে আপ্লুত করে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। ধীরে ধীরে বাংলাদেশের প্রতি আমার অনেক মায়া বসে গেছে। বাংলাদেশের কালচার ও কৃষ্টির সাথে আমি কেমন যেন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। ইতিমধ্যে অনেকের সাথে পরিচিতি ঘটেছে, অনেকের সাথে হয়েছে বন্ধুত্ব। রাষ্ট্রদূত হিসেবে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পেয়ে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। আশা করছি আগামী দিনগুলো আমার সুন্দর কাটবে।
অত্যান্ত বন্ধু সুলভ, সহজ সরল মনোভাব নিয়ে কথাগুলো বললেন বাংলাদেশে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃক নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আল হামুদী।
তিনি রাষ্ট্রদূত হিসেবে ইতিমধ্যে আমিরাত সরকারের মহামান্য প্রেসিডেন্ট শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের কাছে শপথ বাক্য পাঠ করেছেন। অচিরেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত পরিচয় পত্র পেষ করবেন। যাত্রার প্রাক্কালে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তার ধ্যান ধারণা ও দেশটি প্রসঙ্গে তার আন্তরিকতার কথা তুলে ধরেছেন আমিরাতে অবস্থানরত হামুদির ঘনিষ্ঠ কিছু বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে। আমিরাতের পূর্বাঞ্চলে আরব সাগরের তীরে এক সুশীতল স্থানে বসে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী হামুদী বাংলাদেশ ও আমিরাতের দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন এই বন্ধুত্ব চির অটুট থাকুক আমরা সেটাই প্রত্যাশা করি। বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠী আমাদের দেশে রয়েছে। এ দেশটির উন্নয়নে তাদের ব্যাপক অবদান রয়েছে। আমার দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে এবং বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগের সম্ভাবনাও রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে এগিয়ে যাওয়া আমার প্রথম কাজ হবে। যে কোন দেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। আমরা চাই বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক। হামুদী আরো বলেন আমরা আশা করব বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসবে। ভিজিট ভিসায় এসে অনেকে কাজ পাচ্ছে না বলে আমি জেনেছি।
তিনি বলেন, আমরা চাই না এখানে এসে মানুষের দুরাবস্থায় পড়ুক। হামুদি আরো বলেন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমরা আশা করব আমিরাতের সাথে দেশটির সুসম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে। যেকোনো সময় আমিরাত বাংলাদেশের পাশে ছিল থাকবে।
ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউ এ ই,র সভাপতি ও সময় টিভি প্রতিনিধি শিবলী আল সাদিক, যুগ্ম সম্পাদক এস এম মোদাসসের শাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল শাহীন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আমিরাতে অবস্থানরত বাংলাদেশী ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব এ কে আজাদ।
এ সময় নতুন রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আল হামুদিকে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউ এ ই,র পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা সহ আন্তরিক অভিনন্দন জানানো হয়। দু দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা রাষ্ট্রদূত হিসেবে হামুদির সার্বিক কার্যক্রমে বাংলাদেশের গন মাধ্যম কর্মীরা পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আল হামুদি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বাড়ানোর ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেবেন বলে জানিয়েছেন৷ বাংলাদেশের জনশক্তি আমিরাতের সার্বিক উন্নয়নে ভুমিকা রাখার বিষয়টি তিনি অকপটে শিকার করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
তাছাড়া সৌজন্য সাক্ষাতে বাংলাদেশের সার্বিক বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন তিনি৷ চলতি বছরের মার্চ মাসে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত থাকাকালীন সময়ে বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
আব্দুল্লাহ আলী আল হামুদি নতুন দায়িত্ব পাওয়ার আগে ঢাকায় আমিরাতের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে তিনি আমিরাতের হয়ে ২০১৩-১৪ সাল পর্যন্ত ত্রিপলি, লিবিয়ার দূতাবাসের ডেপুটি হেড অফ মিশন ছিলেন। ২০১৫-১৭ সাল পর্যন্ত তিনি আমিরাতের কোপেনহেগেন, ডেনমার্কের দূতাবাস প্রতিষ্ঠার সদস্য ছিলেন।
Leave a Reply