কোলাঘাট ব্লকের কোলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ওই বৃদ্ধার বড় ছেলে ও বউমা করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দিন কয়েক আগে বৃদ্ধারও করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় শুক্রবার সকালে মাকে কোলাঘাটের পাইকপাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান ছোট ছেলে। চিকিৎসক তাকে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটিতে স্থানান্তর করেন। মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে শত চেষ্টা করেও অ্যাম্বুলেন্স খুঁজে পান না ছেলে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এমনকি থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোন সুরাহা মেলেনি।
এ দিকে, অবস্থার অবনতি হতে থাকে বৃদ্ধার। উপায় না দেখে নিজের বাইকে মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ছোট ছেলে। বৃদ্ধার ছোট ছেলে বলছিলেন, আর উপায় ছিল না। মাকে বাইকে বসিয়ে একটা গামছায় নিজের সঙ্গে বেঁধে নিই। তারপর বাইক চালিয়ে পাঁশকুড়া হাসপাতালে পৌঁছই। তাঁর মতে, করোনায় আক্রান্ত বা করোনার উপসর্গযুক্ত রোগীকে কেউ অ্যাম্বুল্যান্স নিতে রাজি হচ্ছে না। প্রশাসনকেই এর সমাধান করতে হবে।
সমস্যা স্বীকার করেই কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল বলেন, গত ১৪ জুন দুর্ঘটনায় আমাদের ব্লকের করোনা রোগী বহনকারী একটিমাত্র অ্যাম্বুল্যান্স নষ্ট হয়ে যায়। অ্যাম্বুল্যান্স চালকও মারা যান। আমরা এ পরিস্থিতিতে অন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্স দিয়ে কোনওরকমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি। আরও কোনও অ্যাম্বুল্যান্স চালক কাজ করতে রাজি হচ্ছেন না। সে জন্যই ওই বৃদ্ধাকে অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া যায়নি।
এই ঘটনাকে সামনে রেখে করোনাকালে বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। দলের কোলাঘাট মণ্ডল ৩-এর সভাপতি বিবেক চক্রবর্তী বলেন, একটা অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করতে পারছে না প্রশাসন। বোঝা যাচ্ছে, এরা করোনা নিয়ে রাজনীতিতেই ব্যস্ত। স্বাস্থ্য পরিষেবায় নজর নেই। এদিকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এই ঘটনাটি জানি না। আর বিজেপি যে সব রাজ্যে ক্ষমতায় আছে, সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্দশা কারও অজানা নয়।
Leave a Reply