জলাশয়-জলাধার আইন লঙঘন করে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের শতবর্ষ পুকুরটি ভরাটের অভিযোগ উঠেছে।
১৭৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কারাগারের পুকুরটি শতবর্ষের পুরনো। জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর-জলাশয়, নদী-খাল ইত্যাদি ভরাট করা বেআইনি। ওই আইনের ৫ ধারা মতে, জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণিও পরিবর্তন করা যাবে না।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুস সাত্তারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, -শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের উন্নয়ন প্রকল্পে গৃহীত প্রকল্পটি গণপূর্ত বিভাগের অধীনে নয়, বরং এটি জেল কর্তৃপক্ষের অধীনে। কুমিল্লার জেল কর্তৃপক্ষ এ মাস্টারপ্ল্যানটি করেছে এবং আইজি প্রিজন এর দপ্তর থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে একনেকের মাধ্যমে । কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রকল্পের এ কাজটি শুধু শতবর্ষ পুকুর ভরাট পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নয় বরং কেন্দ্রীয় কারাগারের বাহিরে কুমিল্লা ডিসি রোড সংলগ্ন বিশাল বড় জলাশয় ভরাট করে কারাগারের সেই প্রজেক্টের কাজ চলছে। এ জলাশয়টি একসময় মাছ চাষের জন্য ব্যবহৃত হতো যেটি মূলত কুমিল্লা কালেক্টরেট এর মালিকানাধীন তথা কুমিল্লা জেলা প্রশাসক এর অধীনে আছে ।
এ জায়গার মালিকানা নিয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং মামলায় কোনো সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কোর্ট থেকে এ প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কিন্তু কোর্টের এ আদেশ জারির পরও প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান কুমিল্লা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী।
এদিকে পরিবেশ রক্ষা আইন অমান্য করে শতবর্ষী পুকুর ভরাট ও জলাশয় ভরাট করে প্রকল্পের কাজের বিষয়ে কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি জানান, কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এ সংক্রান্ত কোন অফিশিয়াল নোটিশ তাঁদের পাঠানো হয়নি, তাই এ ব্যাপারে তাঁদের কোনো ধারণাও নেই।
শতবর্ষী পুকুর ভরাট এবং জলাশয় ভরাট করে প্রকল্পের কাজের বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান জানান , কুমিল্লাবাসীর উন্নয়নে কুমিল্লাবাসীর পক্ষেই যেন সবকিছু হয় সে লক্ষ্যে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন এবং মামলার সবকিছু কুমিল্লাবাসীর পক্ষে আসা পর্যন্ত তিনি কাজ করে যাবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন ।
যেখানে স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পরিবেশ রক্ষার লক্ষ্যে আইন নির্ধারণ করা আছে এবং জায়গাটি কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের অধীনে উপরন্তু কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরে শতবর্ষী পুকুর ভরাটের ব্যাপারটি সম্পর্কে কিছু না জানিয়ে কিভাবে এ প্রকল্পের কাজ চলছে এ নিয়ে কুমিল্লা সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান আইজি মহোদয়ের অনুমতি ব্যতীত তিনি কোন প্রকার বক্তব্য দিতে নারাজ। শতবর্ষী পুকুর ভরাটের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি প্রকল্পের কাজের সম্পূর্ণ দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগ এবং ECNEC উপর ন্যস্ত করেছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরকে শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে প্রকল্পের কাজ এর ব্যাপারটি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সে প্রশ্নেরও কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
Leave a Reply