মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায় পিডিবির গলাকাটা বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছে স্থানীয়রা। বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিলের কারণে প্রায়ই হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা, অনেককেই আবার গুনতে হচ্ছে জরিমানা। ভুতুড়ে বিল পরিশোধে ব্যর্থ হলে অনেক সময় গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন সহ মিটার খুলে নেওয়ারও ঘটনা ঘটছে বলেও জানান অনেকে।
জানা যায়, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটারের রিডিং দেখে বিল দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতিমাসে অফিসে বসে অনুমান নির্ভর ভুতুড়ে বিল তৈরি করে গ্রাহকদের কাছে বিলি করা হয়। এতে করে অতিরিক্ত বিলের বোঝা মাথায় নিয়ে বিদুৎ অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিচ্ছে সাধারন গ্রাহক। অনেক সময় অফিসের লোকজনের সাথে ভুতুড়ে বিলকে কেন্দ্র করে গ্রাহকরা জড়িয়ে পড়ছেন বাক বিতণ্ডায়। দীর্ঘদিন থেকে এ সমস্যা চলতে থাকায় গ্রাহকদের দুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, অনেকেই অবৈধভাবে বিদ্যুৎ চুরি করে ব্যবহার করছেন। তার কারণে বিদ্যুৎ বিতরণে সিস্টেম লস হচ্ছে। এ ঘাটতি পূরণে বৈধ গ্রাহকদের অতিরিক্ত বিল দিয়ে সমন্বয় করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি নিজে ভুতুড়ে বিলের ভুক্তভোগী। ৭৫০ ইউনিটের বেশি বিল দিয়ে যাচ্ছি মাসের পর মাস। বিদ্যুৎ অফিসকে বার বার বলেও এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
বেলাগাও গ্রামের আব্দুস সালাম বলেন, আমার মিটারে চলতি ইউনিট হচ্ছে ৩৪২৭ অথচ মিটার না দেখেই আমাকে বিল দেওয়া হয়েছে ৬৫০০ ইউনিটের। আমি একজন সাধারন কৃষক। কিন্তু বারবার অফিসে গিয়েও এ সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। আমরা এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই।
ভুক্তভোগী দুলাল আহমদ বলেন, আমি সাধারণ একজন খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতিমাসে অতিরিক্ত বিল দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমার মিটারে ২৮৫০ ইউনিট থাকলেও আমাকে বিল দেওয়া হচ্ছে ৫১৩০ ইউনিটের। বার বার অফিসে ধরনা দিয়েও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জুড়ী পিডিবির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আনসারুল কবির শামীম বলেন, বন্যার কারণে কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার দেখতে পারেন নি। এছাড়া অনেকের মিটার ঘরের ভিতরে থাকায় দেখা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এ সময় তিনি মিটার না দেখে গ্রাহকদের বিলের কপি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। যারা অতিরিক্ত বিলের অভিযোগ করেছেন মিটার দেখে সম্বনয় করা হবে।
পিডিবির আবাসিক প্রকৌশলী আনসার আলী বলেন, আমি এখন ছুটিতে আছি। এ ব্যাপারে পরে কথা বলব।
Leave a Reply